Ilish side effects: ইলিশ ভালোবাসে না এমন মানুষ খুব কমই দেখা যায়। বিশেষত বাঙালিরা বর্ষার অপেক্ষায় থাকে একটু রুপোলি ইলিশের স্বাদ নেওয়ার জন্য। তাই ইলিশের দাম যতই চড়া হোক না কেন সবাই কম বেশি ইলিশ কিনে, ইলিশ ভাঁপা, ইলিশের পোলাও, সরষে ইলিশ এমনকি খিচুড়ির সাথে করা তেলে ভাজা ইলিশের স্বাদ উপভোগ করতে চান।
কিন্তু বর্তমানে শোনা যাচ্ছে, ঘন ঘন ইলিশ খেলে নাকি বাড়তে পারে, সুগার, কোলেস্টেরল এবং প্রেসার। তাই ইলিশের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার (Ilish side effects) ভয়ে অনেক সচেতন মানুষই ইলিশ খাওয়া কমিয়ে দিচ্ছেন। চলুন পুষ্টিবিদদের কাছ থেকে ঘটনার সত্যতা যাচাই করা যাক।
ইলিশের উপকারিতা
ইলিশ খেলে যেমন মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা বাড়বে তেমনি ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করবে। ইলিশের মধ্যে যেমন রয়েছে প্রোটিন তেমনি রয়েছে ভিটামিনের সম্ভার। শরীরের ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১২ এবং ভিটামিন ডি অভাব পূরণের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে ইলিশ মাছ। এর ফলে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং BMR বৃদ্ধি করত বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হার্ট এবং চোখের জন্য বিশেষত উপকারী। ইলিশ মাছ প্রচুর ওমেগা- ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। ইলিশ খেলে শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার বৃদ্ধি পায়।
পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, ১০০ গ্রাম ইলিশ থেকে প্রায় 21 গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। তাই রোজ ইলিশ খেলে যে কারো প্রোটিনের ঘাটতি দূর হয়ে যাবে। ইলিশ এপিএ ও ডিএইচএ নামক ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে বলেই ইলিশ মাছ দেহের রক্ত সঞ্চালনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও ইলিশে রয়েছে আয়রন ক্যালসিয়াম এবং সেলেনিয়াম, যা হাড়কে জোরদার রাখতে সাহায্য করে।

ইলিশের কিছু সীমাবদ্ধতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া / Ilish side effects
সব মাছের থেকে ইলিশ সুস্বাদু হওয়ায় লোভটা সামলে রাখা দুষ্কর হয়ে যায়। বিশেষত হাই প্রেসার, সুগার, কোলেস্টেরল যাদের আছে। কারণ ইলিশে অন্যান্য পুষ্টি গুণের পাশাপাশি রয়েছে প্রচুর পরিমানে কোলেস্টেরল। পুষ্টিবিদদের মতে, যদি ১০০ গ্রামের নিচে ইলিশ খেলেও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকবে। পুষ্টিবিদদের ভাষায়, সুগার যাদের রয়েছে তাদের ইলিশ খেতে হবে মেপে ঝেপে, নইলে হবে বিপদ। বেশি ইলিশ খেলে যখন তখন সুগার হাই হয়ে যেতে পারে। ফলে লোভের কারণে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে কিডনি, চোখ, স্নায়ু সহ শরীরের অন্যান্য অঙ্গের।
যাদের এইচবি১সি ৬.৫ বা তার নীচে রয়েছে তাঁরা চাইলে মাসের মধ্যে ২০০ গ্ৰাম পর্যন্ত ইলিশ খেতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ইলিশের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি (Ilish side effects) খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু যাদের এইচবি১সি ৬.৫ এর ওপরে তাদের এক্ষেত্রে লোভ না করাই ভালো। আর যাদের ব্লাড প্রেসার রয়েছে তারা খুব সম্ভব মাসে একবার জোর হলে দুবার ইলিশ খেতে পারবেন। নইলে বিপদের মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সাবধানতা আপনার বা আপনাদের হাতেই।
আরও পড়ুন -> পুকুরে ইলিশ! অবাক কান্ড! কী বলছেন মৎস্যজীবী ও বিশেষজ্ঞরা?
সব কিছুই পরিমান মাফিক
যেকোনো খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে পরিমাণ মত খাওয়ার উচিত। অত্যাধিক খাবার খাওয়া শরীরের পক্ষে অবশ্যই ক্ষতিকর। বিশেষত, তেল-মশলাযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া মোটেই হিতকর নয়। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে সপ্তাহে এক আধবার ইলিশ খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু অতিরিক্ত তেল মশলা দিয়ে রান্না করা যাবে না। তাই এভাবে মেপে চললে সুস্থ থাকাটা সেরকম কঠিন ব্যাপার নয়।
তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী চললে এবং পরিমাণ মতো খাবার খেলে এবং সাথে শরীরচর্চার মধ্যে থাকলে শরীরের সাথে সাথে মনও ভালো থাকবে এবং ইলিশের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি (Ilish side effects) খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারবে না।। বিস্তারিত জানতে অবশ্যই নিজস্ব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
এই রকম আরো খবর পেতে চোখ রাখুন বেঙ্গলি নিউজ ৩৬৫ এর পাতায়।