আগামী ৯ই এপ্রিল ঘটতে চলেছে মেট্রো রেলের ইতিহাসে সবথেকে যুগান্তকারী ঘটনা। সেতুর বিবর্তনের পর এবার পালা মেট্রোরেলের বিবর্তনের। এই প্রথম গঙ্গার নিচ থেকে অর্থাৎ হুগলি নদীর নিচ থেকে যাবে মেট্রোরেলের লাইন (Underwater Metro)। সেতুর মাধ্যমে নয়, সুড়ঙ্গের দ্বারা জুড়তে চলেছে কলকাতা ও হাওড়া। শুধু বাংলা নয়, সারা দেশে প্রথম মেট্রোর এই নতুন রূপ দেখবে জনগণ।
সূচিপত্র (Table of Contents)
দুই যমজ শহরের ইতিহাস
প্রথমবার ১৮৭৪ সালে দুই যমজ শহর কলকাতা ও হাওড়া সেতুর মাধ্যমে যুক্ত হয়েছিল। ইংরেজদের এই উপনিবেশ জুড়ে নানা রকম ইতিহাস জড়িয়ে আছে। তারপর উনিশ বছরের চেষ্টায় গঙ্গা বাধা পড়েছে। হাওড়া ব্রিজ প্রথমে ছিল একটি ভাসমান সেতু, পরে পরিবর্তনের ফলে এটি হয়ে যায় ক্যান্টিলিভার সেতু। অবশেষে ১৯৪৩ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যাত্রীবিহীন ট্রাম জ্বালিয়ে প্রথমবার উদ্বোধন করা হয়েছিল কলকাতার এই আশ্চর্যজনক সেতুটি।
কলকাতার মুকুটে নতুন পালক
কলকাতা এমনিতেই পরিচিত দেশের প্রথম মেট্রো শহর হিসাবে। তবে ৯ ই এপ্রিল ঘটতে চলেছে এক আশ্চর্য ঘটনা। রবিবার গঙ্গার তলা দিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট রুটের মেট্রো (Underwater Metro) প্রথমবার চলবে। কিন্তু এটি শুধুই মাত্র মহড়া দৌড়। বাগবাজারের বিপর্যয়ের পর থেকে মেট্রো মরিয়া হয়ে চাইছে হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত রুটটি চালু করতে।
কিভাবে হবে এই মহড়া?
এই মহড়া করতে গিয়ে যথেষ্ট সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে মেট্রো রেলকে। প্রথমে সল্টলেক ডিপো থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত একটি রেককে চালু করা হবে। রেকটিকে যান্ত্রিক মাধ্যমে টেনে নেওয়া হবে শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত। পরে থার্ড লাইনের সংযোগ পেয়ে ফের রেকটি মহাকরণ, হাওড়া স্টেশন পেরিয়ে গঙ্গার নিচ দিয়ে ছুটে যাবে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত। মেট্রো রেলের ইতিহাসের ৯ই এপ্রিল ঘটতে চলেছে একটি স্মরণীয় ঘটনা। বউবাজার জট না কাটা পর্যন্ত এমনই বিক্ষিপ্তভাবে মেট্রো রেল চালানো হবে হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত। প্রথম ছয় মাস চলবে এই রেকটির ট্রায়াল। তারপর সেফটির দিক থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেই যাত্রী পরিষেবা শুরু হবে।

কেমনভাবে তৈরি হয়েছে গঙ্গার নিচের মেট্রো টানেল (Underwater Metro Tunnel)?
গঙ্গার জল তল থেকে মাত্র ১৩ মিটার গভীরে রয়েছে নদীবক্ষ। এর থেকেও আরও ১৩ মিটার নিচে আছে মেট্রো টানেলটি (Underwater Metro Tunnel)। সুরঙ্গের উপরিভাগ থেকে নিচের ভাগের ব্যবধান হলো ৬ মিটার। অর্থাৎ সবকিছু মিলিয়ে গঙ্গা-বক্ষ থেকে মেট্রো টানেলের দূরত্ব হলো উনিশ মিটার। মাত্র ৬৬ দিনে ২০১৮ সালে এই ৫০০ মিটারের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। মেট্রো প্রকল্পের এক কর্তা দাবি করেছেন যে, গঙ্গার সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি হিসেব করে তবেই মেট্রোর লাইন পাতা হয়েছে। ১২০ বছরেও এই মেট্রোর কোনরকম ক্ষতি হবে না। এমনকি ভূমিকম্পের হাত থেকে যাতে মেট্রো রক্ষা পায় সেই ব্যবস্থাও করেছে মেট্রো রেল।
কলকাতা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো এবং এর রুট সম্বন্ধে আরো জানতে দেখে নিন উইকিপিডিয়ার এই পাতাটি।
এই ধরনের আরো খবর জানতে অবশ্যই চোখ রাখুন বেঙ্গলি নিউজ ৩৬৫ এর পাতায়।