বাঙালির মতো ভ্রমণপিপাসু জাতি খুব কমই দেখা যায়। ঘুরতে যাওয়া যেন তাদের রক্তের সাথে মিশে আছে। যেকোনো পর্যটন কেন্দ্রে গেলেই বাঙালি অবশ্যই চোখে পড়বে। নতুন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠতে চলেছে তাও আবার এই খাস বাংলাতেই। পশ্চিমবঙ্গে এক নতুন সমুদ্র সৈকতের (sea beach) খোঁজ মিলেছে এবং তাকে ঘিরে স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগী হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য।
কোথায় এই পর্যটন কেন্দ্র (Tourist center)?
শুনলে সত্যি অবাকই হতে হয়, এত কাছে এত সুন্দর একটি পর্যটন কেন্দ্র (Tourist center) গড়ে উঠতে চলেছে ভাবলেই বাঙালির ঘুরতে যাওয়ার প্রবণতা যেন আরো বেড়ে যাবে।পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি মহকুমার দেশপ্রাণ ব্লকের দরিয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে অবস্থিত কানাইচট্টা সমুদ্র সৈকতকে (Kanai Chatta sea beach) ঘিরেই স্থানীয় প্রশাসনের এত জল্পনা। জায়গাটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে সত্যিই লাভজনক হয়ে উঠতে পারে। পর্যটন কেন্দ্রের মানচিত্রে একটি নতুন জায়গা স্থান করে নিল। মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সমুদ্রের জলরাশি সমস্ত কিছুই পর্যটকদের আকর্ষিত করবে।

পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে উদ্যোক্তা কারা?
কানাইচট্টা সমুদ্র সৈকতকে (Kanai Chatta sea beach) বাংলার নতুন পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার পিছনে সবথেকে বড় উদ্যোগ হল দেশপ্রাণ পঞ্চায়েত সমিতির। এই পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগের জন্যই প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা খরচা করে গড়ে উঠতে চলেছে কানাইচট্টা সমুদ্র সৈকতের ঝাউবনের ভিতরে বিভিন্ন গেস্ট হাউস (Guest House)। পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে এই নতুন উদ্যোগ। সাগর সঙ্গমে সৈকতভূমি হল এই সমুদ্রতটটির নতুন নাম। এই অজানা সমুদ্রতটটিকে সুন্দর করে তোলার পিছনে সব থেকে বড় অবদান কানাইচট্টা পঞ্চায়েতসমিতি ও দরিয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের।
পর্যটকদের জন্যই এই নতুন উদ্যোগ (New initiative for tourists)
কানাইচট্টা একটি অখ্যাত জায়গা, পর্যটকরা সেভাবে কেউই কখনো এই স্থানে আগমন ঘটাননি। তবে প্রশাসন শুধুমাত্র উদ্যোগ নিয়েছে ভ্রমণ পিপাসু মানুষের পিপাসা মেটানোর জন্য। কানাই চট্টার সমুদ্র সৈকত অবশ্যই একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হয়ে গড়ে উঠতে পারে, এই কথাটাই স্থানীয় প্রশাসন সব সময় মাথায় রেখেছে। পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ১০০ দিনের কাজের দ্বারা দুটি রাস্তা তৈরি করা হয়েছে এইখানে। যাতে পর্যটকরা খুব সহজেই এই সমুদ্র সৈকতে পৌঁছে যেতে পারেন। পর্যটকদের সুবিধা অসুবিধার কথা মাথায় রেখেই গড়ে উঠতে চলেছে কানাইচট্টা সমুদ্র সৈকত। আগামী দিনে আশা করা হচ্ছে বহু পর্যটক এখানে ভিড় জমাবে।
কিভাবে সাজানো হচ্ছে এই পর্যটন কেন্দ্রকে?
একটি গেস্ট হাউস এখানে তৈরি করা হয়েছে পর্যটকদের সুবিধার জন্য, যার জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে পঞ্চদশ অর্থ কমিশন। আস্তে আস্তে শুরু হবে অন্যান্য পরিকাঠামোর কাজগুলো। কানাই চট্টা সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের কাছে একটি বাড়তি পাওয়া। প্রকৃতি একটুও কার্পণ্য করেনি এই জায়গাটিকে সাজানোর জন্য। ম্যানগ্রোভ জঙ্গল ও ঝাউবন মিলিয়ে সত্যিই সমুদ্র সৈকতটি দেখার মত। লাল কাঁকড়ার খেলা, বিস্তীর্ণ বালুকারাশি, ঝাউবনের মেলা সব মিলিয়ে কানাইচট্টা সমুদ্র সৈকত মানচিত্রে একটি আলাদাই জায়গা করে নিয়েছে।
পর্যটকদের বাড়তি পাওনা
সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বিভিন্ন স্মৃতি জড়িয়ে আছে কানাইচট্টার দূরে অবস্থিত দরিয়াপুর অঞ্চলে।পর্যটকদের দেখার জন্য বিভিন্ন জায়গা রয়েছে এখানে,যেমন কপালকুণ্ডলা মন্দির ও লাইট হাউস। দরিয়াপুরের কিছুটা দূরেই অবস্থিত রসুলপুর নদী এবং বঙ্গোপসাগরের মোহনায় অবস্থিত পেটুয়াঘাটে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্যবন্দর অবস্থিত রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন আশা করছে ভবিষ্যতে অবশ্যই পর্যটকদের আনাগোনা আরো বৃদ্ধি পাবে।
গুগল ম্যাপ / Kanai Chatta sea beach Google Maps location -> https://goo.gl/maps/4XYyE54sEp9NsMdn8
এই রকম আরো খবর পেতে চোখ রাখতে হবে বেঙ্গলি নিউজ ৩৬৫ এর পাতায়।